১ম জাতীয় কংগ্রস
ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)
২৬ -২৮ নভেম্বর ২০০৬
ঢাকা
দাবিনামা:
মৌলিক দাবিসমূহ :
১. পররাষ্ট্র, মূদ্রা, প্রতিরক্ষা ও ভারী শিল্প ব্যতীত রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের সকল বিষয় পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থায়ী বাসিন্দাদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত একটি আঞ্চলিক সংস্থার নিকট হস্তান্তরিত করার মাধ্যমে পূর্ণস্বায়ত্তশাসন কায়েম করা।
২. পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, মুরুং, খুমি, চাক, খিয়াং, লুসাই, পাংখো, বম, তনচংগ্যা, সাঁওতাল, গুর্খা, অহোমী ও রাখাইন জাতিসত্তাগুলোকে সংবিধানে স্বীকৃতি প্রদান করা এবং বাংলাদেশে বসবাসরত সকল জাতি ও জাতিসত্তা সমানাধিকার ও সমমর্যাদা ভোগ করবে এই নিশ্চয়তা সংবিধানে লিপিবদ্ধ করা।
৩. বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে সংখ্যালঘু জাতিসত্তাগুলোর জন্য সংরক্ষিত আসনের (মহিলা আসনসহ) বিধান করা ও উক্ত আসনসমূহে সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।
৪. অপারেশন উত্তরণের নামে বলবৎ সেনাশাসন বন্ধ করে সেনাবাহিনীকে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে প্রত্যাহার করা।
৫. রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পুনর্বাসিত সেটলারদেরকে জাতিগত নিপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার বন্ধ করা এবং তাদেরকে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সরিয়ে নিয়ে তাদের স্ব স্ব জেলায় অথবা অন্য কোন সমতল জেলায় জীবিকার নিশ্চয়তাসহ সম্মানজনক পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা। নতুন সেটলার অনুপ্রবেশ ও পুনর্বাসন বন্ধ করা।
৬. প্রথাগত ভূমি অধিকারের স্বীকৃতি ও পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি ব্যবস্থাপনার পূর্ণ অধিকার প্রদান করা।
সম্পূরক দাবিসমূহ:
১. রাজনৈতিক:
ক. সেনাবাহিনী কর্তৃক সভা সমাবেশসহ গণতান্ত্রিক অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ বন্ধ করে পার্বত্য চট্টগ্রামে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করা।
খ. গ্রামে গ্রামে সেনা টহল, হামলা, অপারেশন, ঘেরাও এবং গ্রামবাসীদের ওপর অত্যাচার, আটক ও হয়রানি বন্ধ করা।
গ. বান্দরবানে গোলন্দাজ ও বিমান বাহিনীর ট্রেনিং সেন্টার ও ফায়ারিং রেঞ্জ স্থাপন প্রক্রিয়া বাতিলসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে নতুন সেনা ক্যাম্প স্থাপন ও সম্প্রসারণ বন্ধ করা।
ঘ. কলমপতি, ফেনী, মাটিরাঙ্গা-গোমতী, লোগাং, লংগুদু ও নান্যাচর গণহত্যাসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে এযাবত সংঘটিত সকল গণহত্যার স্বেতপত্র প্রকাশ এবং দোষী ব্যক্তিদের বিচার ও শাস্তির ব্যবস্থা করা।
ঙ. ইউপিডিএফ কর্মি ও সমর্থকদের খুন, গ্রেফতার, নির্যাতন ও হয়রানি বন্ধ করা ও দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা তুলে নেয়া; অবিলম্বে আটককৃতদের মুক্তি দেয়া।
২. অর্থনৈতিক:
ক. পার্বত্য চট্টগ্রামের পশ্চাদপদ জাতিসত্তাগুলোর উন্নয়ন ও সার্বিক বিকাশের লক্ষ্যে সুস্পষ্ট রাষ্ট্রীয় নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা।
খ. উন্নয়ন বোর্ডকে দলীয় প্রভাবমুক্ত করে পুনর্গঠন করা এবং উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে জনগণকে সম্পৃক্ত করা।
গ. গ্রামীন ব্যাংক, আশা-সহ এনজিওগুলোর ক্ষুদ্র ঋণ কর্মসূচীর নামে দরিদ্র জনগণকে শোষণ ও নৈতিক অধঃপতনের দিকে ঠেলে দেয়ার প্রক্রিয়া বন্ধ করা।
৩. ভূমি
ক. চা, কমলা ও রাবার বাগান সৃষ্টির নামে অস্থানীয় ব্যক্তিগত উদ্যোক্তাদের কাছে দেয়া জমির লিজ ও বন্দোবস্তী বাতিল করা।
খ. সরকার ও সেনাবাহিনী কর্তৃক ভূমি বেদখল ও অধিগ্রহণ বন্ধ করা; তথাকথিত বনায়ন, ইকো পার্ক ও অভয়ারণ্য সৃষ্টি এবং সেনা ক্যাম্প ও ট্রেনিং সেন্টার নির্মাণের অজুহাতে জাতিসত্তার জনগণকে নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদ বন্ধ করা।
৪. কৃষি
ক. কৃষি উপকরণের দাম কমানো; কৃষি কাজের জন্য প্রয়োজনীয় ঋণ, যন্ত্রপাতি, সার, বীজ ইত্যাদি সহজ শর্তে ও কম দামে সরবরাহ করা; চাষের মৌসুমে সেচের বন্দোবস্ত করা;
খ. কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের বিপননে সহায়তা দান ও ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করা।
গ. বন্যা, খরাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের কৃষি ঋণ মওকুফ করা, সুদমুক্ত ঋন প্রদান করা এবং ক্ষুদে ও প্রান্তিক চাষীদের উৎপাদনে সহায়তা দান করা।
ঘ. বান্দরবানের প্রত্যন্ত অঞ্চল এবং সাজেক হরিণাসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় আষাঢ় – আশ্বিন মাসে “রাদ”-এর সময় (মঙ্গা পরিস্থিতি) বিশেষ খাদ্য রেশনিং-এর ব্যবস্থা করা।
ঙ. পার্বত্য চট্টগ্রামের চাষীদের বহু কষ্টে উৎপাদিত ফলমূল যেমন আনারস, কাঁঠাল ইত্যাদি সংরক্ষণের জন্য হিমাগার প্রতিষ্ঠা করা।
চ. কাপ্তাই বাঁধের জলসীমা বীজ রোপন ও ফসল তোলার মৌসুমের জন্য সহায়ক হয় এমনভাবে নির্ধারণ করা। পানি কমা ও বাড়ার বিষয়টি সর্বসাধারণের জ্ঞাতার্থে রেডিও, টেলিভিশন ও সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ও এলাকায় মাইকিং করে জানিয়ে দেয়া।
ছ. কঠোরভাবে জুম চাষ নিয়ন্ত্রণ করা; পাহাড়ে আধুনিক চাষাবাদের উদ্যোগ নেয়া এবং জুমিয়া চাষীদের পুনর্বাসন করা।
জ. ধান্য আবাদী জমিতে বহুজাতিক কোম্পানির পরিবেশ বৈরী তামাক চাষ বন্ধ করা।
৫. ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প
ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের প্রসার ঘটানোর জন্য সহজ শর্তে ঋণ প্রদানসহ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। এ লক্ষ্যে স্থানীয় পুঁজি বিনিয়োগের মাধ্যমে একটি সমবায় ব্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠা করা।
৬. শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্য
ক. পার্বত্য চট্টগ্রামে স্থাপিত শিল্প কারখানায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পাহাড়িদের নিয়োগ দেয়া ও দক্ষ শ্রমিক হিসেবে গড়ে তুলতে তাদের জন্য পর্যাপ্ত ট্রেনিং-এর ব্যবস্থা করা।
খ. পার্বত্য চট্টগ্রামে উৎপাদিত কাঁচামালের উপর ভিত্তি করে শিল্প কারখানা স্থাপন করা ও সেখানে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়োগ দেয়া।
গ. ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে পশ্চাদপদ ও স্বল্প পুঁজির মালিক পাহাড়িদের অগ্রাধিকার ও বিশেষ সুবিধা দেয়া।
৭. ভাষা, শিক্ষা ও সংস্কৃতি
ক. পার্বত্য চট্টগ্রামে আধিপত্যবাদী সাংস্কৃতিক আগ্রাসন বন্ধ করা ও সংখ্যালঘু জাতিসত্তাসমূহের ভাষা ও সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও বিকাশের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। পার্বত্য চট্টগ্রামে একটি টেলিভিশন কেন্দ্র স্থাপন ও ঐ এলাকার জন্য প্রতিদিন অনুষ্ঠান প্রচার করা।
খ. পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য আলাদা শিক্ষা বোর্ড গঠন করা; বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের কোটা নির্ধারণ এবং গরীব ও মেধাবী ছাত্রদের জন্য বৃত্তি চালু করা।
গ. প্রাইমারী লেভেল পর্যন্ত জাতিসত্তাসমূহের স্ব স্ব মাতৃভাষায় শিক্ষা প্রদানের ব্যবস্থা করা। পাঠ্যপুস্তক থেকে জাতিসত্তাগুলোর জন্য অবমাননাকর অংশ বাদ দেয়া এবং তাদের সংগ্রামী ঐতিহ্য ও গৌরব গাঁথা সম্বলিত ইতিহাস পাঠ্যসুচিতে অন্তর্ভুক্ত করা। জাতিসত্তাগুলোর ভাষায় প্রাইমারী লেভেল পর্যন্ত পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের জন্য একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করা।
ঘ. সরকারী দলিলে এবং রেডিও টেলিভিশনসহ সংবাদ মাধ্যমে অবমাননাকর উপজাতি শব্দের ব্যবহার বন্ধ করা ও তার পরিবর্তে সংখ্যালঘু জাতিসত্তা বা ইংরেজীতে এথনিক মাইনরিটি / ন্যাশনালিটি শব্দ ব্যবহার করা।
ঙ. বিভিন্ন স্থানের স্থানীয় নামের বিকৃতি না করা ও বিকৃত নাম ঠিক করা।
চ. উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের নাম পাল্টিয়ে জাতীয় সংখ্যালঘু সাংস্কৃতিক ইনষ্টিটিউট (National Minorities Cultural Institute) রাখা।
ছ. পার্বত্য চট্টগ্রামে ঐতিহ্যবাহী উৎসব বৈসাবি পালনের সুবিধার্থে সরকারী ছুটি কমপক্ষে তিন দিন করা। খৃষ্টান ধর্মাবলম্বীদের জন্য ২৫ – ২৬ ডিসেম্বর দুই দিন ছুটি চালু করা।
জ. চট্টগ্রাম ও ঢাকায় অবস্থিত পাহাড়ি ছাত্রাবাসগুলো বহুতল বিশিষ্ট করা এবং এগুলোর যথাযথ পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য তিন জেলার বয়োজ্যোষ্ঠদের নিয়ে কমিটি গঠন করা।
ঝ. অশ্লিল ভিডিও প্রদর্শনী, অরুচিকর বইপত্র ও ম্যাগাজিন বিক্রি ও বিতরণ নিষিদ্ধ ও কঠোরভাবে বন্ধ করা; যাত্রা তামাশার নামে জুয়া, হাউজি, লটারী ও অন্যান্য নৈতিকতা বিরোধী কর্মকান্ড কঠোরভাবে দমন করা।
ঞ. মদ, জুয়া ও নেশার কবল থেকে তরুণ যুব সমাজকে রক্ষার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা; মাদকাসক্তদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।
৮. নারী অধিকার
ক. পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা সদস্য ও সেটলার কর্তৃক নারী ধর্ষণ ও নির্যাতন বন্ধ করতে হবে ও ধর্ষণকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া।
খ. কল্পনা চাকমার অপহরণকারী লেঃ ফেরদৌস ও তার সহযোগিদের গ্রেফতার ও বিচার করা।
গ. দিঘীনালার মেরুং-এ স্কুল ছাত্রী রুনা চাকমার ধর্ষণকারী ও খনীদের গ্রেফতার ও শাস্তিসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে এ যাবত সংঘটিত সকল ধর্ষণ ঘটনায় জড়িত সেনা সদস্য ও সেটলারদের শাস্তি দেয়া।
৯. প্রত্যাগত শরণার্থী ও আভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু
ক. ভারত প্রত্যাগত শরণার্থীদের পুনর্বাসন সম্পন্ন করা।
খ. আভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয়া ও তালিকা থেকে অস্থানীয়দের বাদ দেয়া।
১০. ধর্মীয়
ধর্ম পালন ও ধর্মীয় অনুদানের ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করা; বৌদ্ধ ভিক্ষুসহ ধর্মীয় পুরোহিতদের ওপর হামলা ও হয়রানি বন্ধ করা; সেনা সদস্য কর্তৃক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের পবিত্রতা নষ্ট বন্ধ করা।
১১. পরিবেশ
ক. পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
খ. বনায়নের নামে পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিবেশের অনুপযোগী বিভিন্ন বিদেশী প্রজাতির গাছ যেমন একাশিয়া, ইউক্লিপটাস, এফিল-এফিল, সেগুন ইত্যাদি লাগানো নিষিদ্ধ করা।
গ. বন্য পশু পাখি শিকার ও বিক্রি নিষিদ্ধ ও বন্ধ করা; বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতির প্রাণীদের রক্ষা ও সংরক্ষণ করতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা।
ঘ. জীব বৈচিত্র্য ও পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ বাঘাইহাট-সাজেক সড়ক নির্মাণ বন্ধ করা।
ঙ. পাহাড়ি এলাকা থেকে অপরিকল্পিতভাবে পাথর উত্তোলন ও পাহাড় কাটা বন্ধ করা; বান্দরবানের কেওক্রাডং ও অন্যান্য জায়গায় পর্যটকের নামে বিভিন্ন লোকের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করা।
চ. কাপ্তাই লেকে ট্রলার, বোট ও লঞ্চের ফিটনেস সার্টিফিকেট নিশ্চিত করা।
ছ. মেট্রোপলিটন শহরে পরিত্যক্ত পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর যানবাহন যাতে পার্বত্য চট্টগ্রামে চলাচল করতে না পারে তা নিশ্চিত করা।
জ. পার্বত্য চট্টগ্রাম ও তার নিকটবর্তী সমতল এলাকায় স্থাপিত ইট ভাটায় ব্যবহারের জন্য প্রতি বছর যে লক্ষ লক্ষ টন কাঠ সরবরাহ করা হয় তা বন্ধ করা।
১২. স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা
ক. বিনামূল্যে চিকিৎসা লাভের অধিকার নিশ্চিত করা। ম্যালেরিয়া নির্মূলের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সংখ্যা বৃদ্ধি করে চিকিৎসা সেবা জনগণের দোর গোড়ায় পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করা। পার্বত্য চট্টগ্রামে মেডিকেল কলেজ, হোমিও মেডিকেল কলেজ ও নার্স প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা।
খ. বনজ ঔষধ ভিত্তিক ঐতিহ্যগত চিকিৎসা ব্যবস্থাকে স্বীকৃতি প্রদান ও তার আধুনিকীকরণের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
১৩. নিরাপত্তা
ক. পার্বত্য চট্টগ্রাম তথা দেশের নিরাপত্তা সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে পাহাড়ি যুবকদের নিয়ে ‘বিশেষ হিল রেজিমেন্ট’ বা ‘মাউন্টেইন ব্রিগেড’ গঠন করা।
খ. এ অঞ্চলের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করা।
গ. সীমান্ত নিরাপত্তার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়োজিত বিডিআর সদস্যদের ৬০ শতাংশ পাহাড়ি যুবকদের মধ্য থেকে নিয়োগ দেয়া।
ঘ. পার্বত্য চট্টগ্রামে তথাকথিত ভিডিপি-আনসার বাহিনী ভেঙে দেয়া।
ঙ. পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়োজিত পুলিশ ও আর্মড পুলিশ বাহিনীতে ৬০ ভাগ পাহাড়িদের মধ্য থেকে নিয়োগ করা।
১৪. চাকুরী সংক্রান্ত
ক. পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদেরকে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে বদলী না করা।
খ. তিন পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের উচ্চপদে জাতিবিদ্বেষী সাম্প্রদায়িক কর্মকর্তাকে নিয়োগ না দেয়া; নিয়োগ প্রদানের ক্ষেত্রে পাহাড়িদের অগ্রাধিকার দেয়া।
গ. বিসিএস ক্যাডার ও তিন বাহিনীর কমিশন পদে পাহাড়িদের জন্য বিশেষ কোটার ব্যবস্থা করা।
১৫. ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জাতিসত্তা
ক. পার্বত্য চট্টগ্রামে চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা ছাড়া ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জাতিসত্তাগুলোর শিক্ষা, সংস্কৃতি ও চাকুরীসহ সার্বিক বিকাশের জন্য বিশেষ রাষ্ট্রীয় নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা।
খ. তাদের জনসংখ্যা বাড়ানোর জন্য বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ করা।
১৬. বিবিধ
ক. পার্বত্য চট্টগ্রামে বৃটিশ আগ্রাসন বিরোধী বীরদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা।
খ. মূদ্রা, ব্যাংক নোট ও পোষ্টাল কার্ড বাংলা ও ইংরেজীর পাশাপাশি চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা ভাষায়ও চিহ্নিত করা।
গ. পার্বত্য চট্টগ্রামে অবিলম্বে মোবাইল নেটওয়ার্ক চালু করা।
ঘ. পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগে পরিচালিত পর্যটন হোটেল ও মোটেল সমূহে চাকুরীর ক্ষেত্রে ৯০ ভাগ পাহাড়িদের মধ্য থেকে নেয়া এবং এসব হোটেলসমূহে সমাজের নেতৃস্থানীয় বয়োজ্যোষ্ঠ ব্যক্তিদের নির্দিষ্ট সময় অন্তর পরিদর্শনের বিধান রাখা।
[২৬ – ২৮ নভেম্বর ২০০৬ ঢাকায় অনুষ্ঠিত পার্টির ১ম জাতীয় কংগ্রেসে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত]